রবিবার, ১৩ মে, ২০১২

খাদের কিনার হতে ফেরার সময় হয়েছে


                                                             আবদুল মান্নান

গুরুত্বপূর্ণ তিন বিদেশী ঘুরে গেলেন বাংলাদেশ। অন্যদেশে কোন বিদেশী অতিথি এলে তা নিয়ে তেমন একটা হৈচৈ হয় না যেমনটা হয় বাংলাদেশে। বাংলাদেশে এমনিতেই সব কিছুতে অতি সন্ন্যাসী আর রাজনীতি হলে তো কথাই নেই। ঠিক এমন অবস্থায় আবার তার সঙ্গে যোগ হয় বিদেশী সন্ন্যাসী । অনেকে আবার মনে করেন যেহেতু আমরা নিজেদের ভাল-মন্দ নিজেরা ঠিকমতো বুঝতে পারি না সে কারণেই অনেক সময় এই বিদেশী সন্ন্যাসীরা এসে আমাদের নিজস্ব ভাল-মন্দ বুঝতে সাহায্য-সহায়তা করেন। আর এই বিদেশী সন্ন্যাসীরা যদি মার্কিন মুলুুক হতে আসেন তা হলে তার কদর বেড়ে যায়। অবস্থা এমন পর্যায়ে পৌঁছেছে যে, ক’দিন আগে বাংলাদেশে সে দেশের রাষ্ট্রদূত নসিহত করলেন মংলাবন্দর ট্রানজিট বন্দর হিসেবে ব্যবহার করতে দিলে তা বাংলাদেশের জন্য মঙ্গলজনক। জানা ছিল না, এই সহজ কথাটা বুঝতে বাংলাদেশে বিশেষজ্ঞের অভাব রয়েছে। তিন বিদেশী অতিথির মধ্যে প্রথমে এলেন জাপানের উপপ্রধানমন্ত্রী। ঐতিহাসিকভাবে জাপান বাংলাদেশের অকৃত্রিম বন্ধু। জাপান বাংলাদেশের সবচাইতে বড় সাহায্যদাতা। এদেশে খুব কম প্রকল্পই আছে যেখানে জাপানের অবদান নেই। তবে তাদের খবরদারি তেমন একটা চোখে পড়ে না। এবার জাপানের উপপ্রধানমন্ত্রী বাংলাদেশ ত্যাগের আগে এদেশে বিদেশী বিনিয়োগে কি কি বাধা আছে তা পরিষ্কার ভাষায় বলে গেছেন এবং তাঁর কথায় কেউ দ্বিমত করবে না। এ প্রসঙ্গে অন্যত্র আলোচনা করার আশা রইল।
জাপানের উপপ্রধানমন্ত্রী বাংলাদেশ ত্যাগের পর কয়েক ঘন্টার ব্যবধানে বাংলাদেশে এলেন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিলারি ক্লিনটন এবং ভারতের অত্যন্ত প্রভাবশালী রাজনীতিবিদ, সে দেশের অর্থমন্ত্রী প্রণব মুখার্জী। মনে করা হচ্ছে আগামী জুলাই মাসে তিনি ভারতের রাষ্ট্রপতি হয়ে যেতে পারেন। তা যদি হয় তা হলে মন্ত্রী হিসেবে এটি সম্ভবত তাঁর শেষ বাংলাদেশ সফর। তবে কংগ্রেস নেত্রী তাঁকে তাঁর মন্ত্রিসভা থেকে ছাড়তে চান না। কারণ, মনে করা হয় ভারতের রাজনীতিতে কোন সঙ্কট দেখা দিলে তা সমাধান করার শেষ অস্ত্রটি প্রণব মুখার্জীর ঝুলিতে আছে। হিলারি ক্লিনটন ছিলেন চব্বিশ ঘণ্টারও কম সময়। কাজ করেছেন বেশ ক’টি। প্রধানমন্ত্রী ও সংসদে বিরোধীদলীয় নেত্রীর সঙ্গে সাক্ষাত, আমাদের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে সহায়তার সমঝোতা চুক্তি স্বাক্ষর, ‘নিখোঁজ’ হওয়া বিএনপি নেতা ইলিয়াস আলীর কন্যার হাত হতে আবেদনমূলক একটি পত্র গ্রহণ, নির্বাচিত সুশীল সমাজের সদস্যদের সঙ্গে আলোচনা, সাংবাদিকদের সঙ্গে প্রশ্ন-উত্তর পর্ব, ক্লিনটন পরিবারের ব্যক্তিগত বন্ধু শান্তিতে নোবেল বিজয়ী ড. মুহম্মদ ইউনূস এবং ব্র্যাকের কর্ণধার স্যার ফজলে হাসান আবেদের সঙ্গে প্রাতঃরাশ এবং সবশেষে বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়া শিক্ষার্থীদের সঙ্গে খোলামেলা আড্ডা। বলতে দ্বিধা নেই, তার পরের কর্মসূচীটা ছিল অত্যন্ত অর্থবহ। কারণ এখানে শিক্ষার্থীরা অনেক খোলামেলা পরিবেশে হিলারির সঙ্গে সময় কাটাতে পেরেছে। প্রণব মুখার্জীর বাংলাদেশ সফর অনেকক্ষেত্রে হিলারির সফরের চাইতে বেশি গুরুত্বপূর্ণ ছিল। তার প্রধান কারণ, তাঁর দেশ বাংলাদেশের সবচাইতে বড় প্রতিবেশী এবং তাঁদের সঙ্গে আমাদের অনেক অমীমাংসিত বিষয় মীমাংসার অপেক্ষায় আছে। আবার এসব বিষয়ের বেশ কিছু বিষয় বাংলাদেশের আগামী নির্বাচনে প্রভাব ফেলবে বলে বিশ্লেষকদের ধারণা। এসবের যদি একটি গ্রহণযোগ্য সুরাহা না হয় তা হলে তা বাংলাদেশের বর্তমান ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগের বিপক্ষে যাবে বলে বিশ্বাস। অবশ্য প্রণব মুখার্জী বেগম জিয়াকে বলে এসেছেন, বাংলাদেশের রাষ্ট্রক্ষমতায় কোন্ দল ক্ষমতায় থাকল তা তাদের বিবেচ্য বিষয় নয়। তারা বাংলাদেশের জনগণের সঙ্গে বন্ধুত্বের সম্পর্কটাকে বেশি গুরুত্ব দেয়। তবে এটি ঠিক, বিএনপি ক্ষমতায় থাকলে ভারতের অর্থনৈতিক লাভটা অনেক বেশি যদিও তার নিরাপত্তা ঝুঁকি অনেকগুণ বেড়ে যায়।
যাওয়ার প্রাক্কালে হিলারি এবং প্রণব মুখার্জী দু’জনই একটা কথা বলে গেছেন আর তা হচ্ছেÑতাঁরা আগামীতে বাংলাদেশে সকলের অংশগ্রহণমূলক একটি সাধারণ নির্বাচন দেখতে চান। তাঁদের এই মন্তব্যে তেমন নতুন কিছুই নেই। একটি বহুদলীয় গণতান্ত্রিক শাসন ব্যবস্থায় এমনটি হওয়াই স্বাভাবিক। অংশগ্রহণ না করলে তাকে কেউ বাধ্যও করতে পারে না। সত্তরের নির্বাচনে মওলানা ভাসানীর ন্যাপ ‘ভোটের বাক্সে লাথি মারো’ বলে অংশগ্রহণ করেনি। ১৯৯৬ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারির নির্বাচনে আওয়ামী লীগও অংশগ্রহণ করেনি। ভাসানীর ন্যাপ আর আওয়ামী লীগের মধ্যে পার্থক্য হচ্ছে মওলানা ভাসানী শোষিতের বিপ্লবের মাধ্যমে রাষ্ট্রক্ষমতা দখলের স্বপ্ন দেখতেন; যেমনটি হয়েছিল সোভিয়েত ইউনিয়ন এবং চীনে। মওলানা কোন লেনিন বা মাও সে তুং ছিলেন না। তিনি একজন খাঁটি দেশপ্রেমিক ছিলেন যেমন সত্য তেমন সত্য তিনি নিয়মিত রাজনৈতিক বিভ্রান্তিতে ভুগতেন। আওয়ামী লীগ কোন বিপ্লবী দল নয় এবং তাদের মধ্যে তেমন কোন বিপ্লবী নেতাও নেই। তারা সব সময় নির্বাচনের মাধ্যমে ক্ষমতায় যাওয়ার চেষ্টা করেছে। ১৯৭৫-এ বঙ্গবন্ধু সপরিবারে নিহত হলে তারা দীর্ঘ একুশ বছর ক্ষমতার বাইরে থেকেছে, শেখ হাসিনা তাঁর দীর্ঘ নির্বাসন জীবন শেষ করে দেশে ফিরে ছত্রভঙ্গ আওয়ামী লীগকে জোড়া লাগিয়েছেন এবং ১৯৯১ সালে অপ্রত্যাশিতভাবে দলকে ক্ষমতায় নিতে ব্যর্থ হলেও ১৯৯৬ সালে নানা প্রতিকূল অবস্থার মধ্যে থেকে সরকার গঠন করেছেন । ১৫ ফেব্রুয়ারির নির্বাচনটি ছিল একটি চরম রাজনৈতিক বিশৃঙ্খলার মধ্যে অনুষ্ঠিত; যখন বিএনপি ছাড়া সকল রাজনৈতিক দল তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচনের দাবিতে রাজপথে আন্দোলন করেছে। এই আন্দোলনের প্রেক্ষাপটও আবার বিএনপি তৈরি করে দিয়েছিল। প্রথমে মাগুরা উপনির্বাচনের নামে এক চরম জালিয়াতি এবং সেই জালিয়াতি এমনই ভয়াবহ ছিল যে স্বয়ং প্রধান নির্বাচন কমিশনারকে সেখান হতে পালিয়ে আসতে হয়েছিল। অবশ্য সেই প্রধান নির্বাচন কমিশনার বর্তমানে বিএনপির সভা-সমিতিতে গিয়ে জাতিকে নানা বিষয়ে নসিহত করেন। আসলে এই নির্বাচনকে কেন্দ্র করেই সর্বমহল থেকে দাবি ওঠে দলীয় সরকারের অধীনে কোন নির্বাচন সম্ভব নয়। নির্বাচন হতে হবে একটি নির্দলীয়-নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে। বেগম জিয়া অনেক টালবাহানার মধ্য দিয়ে শেষ পর্যন্ত ১৯৯৬ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারি সকল দলের বর্জন করা সংসদ নির্বাচনের মাধ্যমে গঠিত সংসদে একটি তত্ত্বাবধায়ক সরকারের বিল পাস করায়; যার অধীনে পরবর্তী নির্বাচনে আওয়ামী লীগ, জাতীয় পার্টি আর জাসদের সমর্থনে সরকার গঠন করে।
১৯৯৬ সালের নির্বাচনে গঠিত সংসদের যে তত্তা¡বধায়ক সরকারের কাঠামো সৃষ্টি করা হয়েছিল তাতে তেমন কোন বড় ধরনের গলদ না থাকলেও ২০০১ সালে সেই কাঠামোতে এক চরম হঠকারী সিদ্ধান্তের মাধ্যমে বিচারপতিদের অবসরের বয়স বাড়িয়ে আবার পুরো ব্যবস্থাকে এক চরম সঙ্কটের মধ্যে ফেলে দেয় একই দল বিএনপি। অবসর গ্রহণের এই বয়স বাড়ানোর সিদ্ধান্তটি ছিল একেবারেই উদ্দেশ্যমূলক; যাতে করে এমন একজন সাবেক প্রধান বিচারপতি তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধান হতে পারেন যিনি এক সময় বিএনপির আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিষয়ক সম্পাদক ছিলেন। এতে পুরো তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থাকে আবার সঙ্কটের মুখে ফেলে দিল এবং আওয়ামী লীগসহ অনেক রাজনৈতিক দল সিদ্ধান্ত নেয়Ñএই ব্যবস্থার অধীনে তারা সংসদ নির্বাচনে যাবে না। তখনও দেশের, দেশের বাইরের অনেক মুরব্বি উপদেশ দিয়ে বলেছিল আলোচনার মাধ্যমে সমস্যার সমাধান করুন। বিএনপি তা না শুনে দেশকে এক চরম নৈরাজ্যের দিকে ঠেলে দেয় এবং শেষ পর্যন্ত সাংবিধানিক বাধ্যবাধকতা, নিয়মনীতি বাদ দিয়ে তৎকালীন রাষ্ট্রপতি ইয়াজউদ্দীন আহমেদ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধান হিসেবে আবির্ভূত হন। উপদেষ্টা হিসেবে সঙ্গে নেন কিছু জি-হুজুরি মার্কা ব্যক্তিকে। এরপরও আওয়ামী লীগ ও অন্যান্য দল নির্বাচনে যেতে রাজি ছিল কিন্তু ক’দিন না যেতেই দেখা গেল এই তত্ত্বাবধায়ক সরকারের নিয়ন্ত্রণের সুতা আসলে বেগম জিয়া ও তার ছেলে তারেক রহমানের হাতেই। যথারীতি আবার সংঘাত এবং রাজপথ উত্তপ্ত এবং শেষতক সেনাসমর্থিত ফখরুদ্দীন সরকারে আবির্ভাব এবং সেই সরকার সংবিধান লংঘন করে দু’বছর ক্ষমতা ভোগ করল। জেলে গেল শেখ হাসিনা আর বেগম জিয়াসহ সকল শীর্ষ পর্যায়ের রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ। ২০০৮-এর নির্বাচনে নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিয়ে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসে ।
পুরো তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থাই গণতান্ত্রিক ধ্যানধারণার বিরুদ্ধে একটি ব্যবস্থা, যার জন্ম বিএনপির অপরিচ্ছন্ন রাজনীতির কারণে। আবার একই কারণে তাদের তৈরি করা ব্যবস্থাকেও তারা প্রশ্নবিদ্ধ করেছে। সুতরাং, আজ বাংলাদেশে যে রাজনৈতিক সঙ্কটের পূর্বাভাস দেখা যাচ্ছে তার জন্য এককভাবে যদিও কাউকে দায়ী করতে হয় তা হলে তা হবে বিএনপি। এরমধ্য এক সংক্ষুব্ধ ব্যক্তি এই তত্ত্বাবধায়ক সরকারের বিরুদ্ধে মামলা করলে দেশের সর্বোচ্চ আদালত এই ব্যবস্থার বিরুদ্ধে রায় দেয়। তবে এও বলে, প্রয়োজনে এই ব্যবস্থার অধীনে আরও দুই দফা সংসদ নির্বাচন হতে পারে তবে সেখানে প্রধান বিচরাপতির কোন ভূমিকা না থাকাই শ্রেয়। আপাতদৃষ্টিতে এখনও অনেক স্ববিরোধিতা আছে যদিও মূল রায়ে কি আছে তা এখনও জনগণ জানে না। এরই মধ্য সরকার, সরকারী দল সংসদে সংবিধান হতে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা বাতিল করে সংবিধান সংশোধন করেছে এবং বলেছে আগামী নির্বাচন কিভাবে হবে তা নিয়ে সংসদে আলোচনা হতে পারে কিন্তু পূর্বের তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচন আর নয়। এ ব্যাপারে বিরোধী দলের কোন প্রস্তাব থাকলে তা তারা সংসদে এসে উত্থাপন করতে পারে। বিএনপি বলছে, আলোচনা হতে পারে একমাত্র তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা নিয়ে এবং তা আলোচনার জন্য উত্থাপন করতে হবে সরকারী দল তথা আওয়ামী লীগকেই। এটি অনেকটা ১৯৯৬ সালের অবস্থায় ফিরে যাওয়া। সোজা চোখে দেখলে তখন বিএনপি এই ব্যবস্থার জন্য একটি ক্ষেত্র তৈরি করে দিয়েছিল যা বর্তমানে অনুপস্থিত। বর্তমান সরকারের আমলে স্থানীয় সরকার হতে সংসদীয় আসন, অনেক নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে এবং তার বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই সরকারী দলের প্রার্থীরা হেরেছে। উচ্চ আদালত বলেছে, দুই টার্ম তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা থাকতে পারে। প্রশ্ন হচ্ছে, তারপর কি সকল রাজনৈতিক দলের নেতা-নেত্রীরা ফেরেস্তা হয়ে যাবেন? তখন পারলে এখন নয় কেন? পারলে এখনই পারতে হবে এবং তার জন্য কোন জেদাজেদী না করে এখনই একটা পথ খুঁজে বের করতে হবে। এটির জন্য সকলের সদিচ্ছার প্রয়োজন। রাজনীতিতে ধৈর্য এবং পরমতসহিষ্ণুতার প্রয়োজন। এটি সরকারী এবং বিরোধী দল উভয়ের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য। অতীতে হঠকারী রাজনীতির কারণে আমাদের অনেক মূল্য দিতে হয়েছে। প্রাণহানি ঘটেছে অসংখ্য। সম্পদ হানির কোন সঠিক হিসেব করা কঠিন। সরকার বলেছে বিকল্প পন্থা হিসেবে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের অধীনে সুষ্ঠু নির্বাচন হতে পারে। তার রূপরেখাও সংসদে আলোচিত হবে। আবার বিএনপির সংসদে যেতে চরম অনীহা। রাজনীতিতে এমন আচরণ মোটেও গ্রহণযোগ্য নয়, তাতে শেষে পরাজিত হয় জনগণ।
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আশরাফ বলেছেন আলোচনা হবে। আর বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল মনে করেন, সেই আলোচনার একটাই বিষয়বস্তু হবে এবং তা হচ্ছে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের পুনর্বহাল। শর্ত দিয়ে বিশ্বের কোথাও কোন ফলপ্রসূ আলোচনা হয় না। খোলা মন নিয়ে আলোচনা না করলে তা স্রেফ প-শ্রম হয়। চারদলীয় জোট সরকারের আমালে আবদুল মান্নান ভূঁইয়া এবং আবদুল জলিলের আলোচনা নাটক তার একটি উৎকৃষ্ট উদাহরণ। কথায় বলে বাঙালী খাদের কিনারায় গিয়ে আবার ফিরে আসে। দেশের মানুষ আশা করে এবারও তা হবে এবং হবে হিলারি বা প্রণব মুখার্জীর প্রত্যাশার কারণে নয় দেশের মানুষের প্রত্যাশার কারণে। দেশের সমস্যা নিয়ে বিদেশীদের কাছে ধর্ণা দেয়া চরম মূর্খতার শামিল এবং এমনটি যারা করে তাদের দেশপ্রেম নিয়েও সন্দেহ আছে। যা করতে হয় তা ্এখনই শুরু করা ভাল। সময় চলে গেলে পরিস্থিতি আরও জটিল হতে বাধ্য। খাদের কিনার হতে ফেরার এখনই সময় ।
লেখক : শিক্ষাবিদ এবং বিশ্লেষক । ১১ মে, ২০১২

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন