শনিবার, ২ জুন, ২০১২

শেখ হাসিনার টিমে পরিবর্তন আনা জরুরী



সরকার নানা কারণে বর্তমানে এক অস্বস্তিকর পরিস্থিতির মুখোমুখি হয়েছে। এর আগে আমার একাধিক লেখায় বলেছিলাম অতীত অভিজ্ঞতা হতে দেখা গেছে সরকারের বেসামরিক প্রশাসন শেষের বছরে এসে পরবর্তী সরকারের জন্য কাজ করা শুরু করে এবং এর ফলে ক্ষমতাসীন সরকার বেশ নাজুক অবস্থায় পরে এমনকি এক সময় কাবু হয়ে পড়তেও পারে। কিন্তু এবার কিছুটা ভিন্নতা পরিলক্ষিত হচ্ছে। অবস্থ দৃষ্ঠে মনে হচ্ছে সরকারের দেড় বছর বাকি থাকতেই প্রশাসন পরের সরকারের জন্য কাজ শুরু করে দিয়েছে এবং সরকারের বিভিন্ন শীর্ষ পর্যায়ে থাকা বিভিন্ন নেতা-নেত্রী ও মন্ত্রিপরিষদের কোন কোন সদস্য ও উপদেষ্টা তাদের কর্মকা- এবং দায়িত্বহীন কথাবার্তা ও বক্তব্যে প্রশাসনের এই অন্তর্ঘাতমূলক কর্মকা-কে সহজ করে দিচ্ছে। ২০০৯ সনে শেখ হাসিনা সরকার গঠনের পর মাস না পেরোতেই তার সরকারকে একটি ভয়াবহ ধাক্কা দিয়েছিল বিডিআর বিদ্রোহ। সে সময় মোটামুটি এটি অনেকের কাছে পরিষ্কার ছিল যে শেখ হাসিনা তাঁর পূর্ণ মেয়াদে শান্তিতে চলতে পারবেন না। বিডিআর ঘটনার মতো ঘটনা অন্য কোন দেশে ঘটলে তা সরকার পতন পর্যন্ত ঘটাতে পারত। সে সময় বাংলাদেশে তা না হওয়ার কারণ শেখ হাসিনার বিচক্ষণতা, সাহস, ভাগ্য এবং সর্বোপরি বিরোধী দলের ছত্রভঙ্গ অবস্থা। সময়ের সাথে সাথে বর্তমানে সব পাল্টে গেছে এবং আপাত দৃষ্টিতে মনে হচ্ছে সরকারের অনেক দুর্বলতা সামনে চলে আসছে আর সরকার বিরোধীরাও আগের চাইতে অনেক বেশি সংগঠিত এবং শক্তিশালী। 
শেখ হাসিনা সরকার গঠনের সময় এক ঝাঁক নতুন মুখ মন্ত্রিসভায় ঠাঁই করে দিয়ে দেশের সকল মানুষকে অবাক করে দিয়েছিলেন। সমালোচিতও হয়েছিলেন বিভিন্œ মহল ও তার সুহৃদদের কাছ থেকে। তার এই পদক্ষেপকে সমর্থনও করেছিলেন অনেকে। সাড়ে তিন বছর পর তার মন্ত্রিসভার সদস্যদের দক্ষতা এবং কার্যক্ষমতার বিচারে ভাগ করলে মোটা দাগে তাদের দু’ভাগে ভাগ করা যায়। প্রথম ভাগে পড়বে কার্যকর ও দক্ষ এবং দ্বিতীয় ভাগে ফেলা যাবে নিষ্কর্মা আর অদক্ষ যারা সরকারের সকল অর্জনকে পানিতে ফেলছে। প্রথম ভাগে দু’চারটি মন্ত্রণালয়ের নাম করতে হলে তাহলে সেখানে অবশ্যই অন্তর্ভুক্ত করতে হবে কৃষি, শিক্ষা, খাদ্য ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা, পরিবেশ, পররাষ্ট্র। সুনাম উদ্ধার করার চেষ্টা করছেন বর্তমান যোগাযোগ ও রেল মন্ত্রণালয়। সব মন্ত্রণালয়ের সফলতা বা ব্যর্থতা সাধারণ মানুষকে তেমন একটা স্পর্শ করে না। সাধারণ মানুষ অনেক মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত মন্ত্রীদের নামও জানে না। দশজনের কাছে জানতে চেয়েছিলাম আমাদের পানি সম্পদ বা ক্রীড়া মন্ত্রীর নাম। একজনও বলতে পারেনি। কিন্তু কোন মানুষকে বলে দিতে হবে না আমাদের স্বরাষ্ট্র বা নৌ পরিবহন মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বে কে আছেন। পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডা. দিপু মনিকে সকলে একনামে চেনে কারণ তিনি বহির্বিশ্বে আমাদের জানালা। অর্থমন্ত্রীকে সকলে চেনেন কারণ তিনি প্রতিদিন টিভির পর্দায় থাকেন এবং ইংরেজী-বাংলা মিশিয়ে প্রায় নানা প্রসঙ্গে তাঁর মতামত ব্যক্ত করেন যার অর্ধেকটা সাধারণ মানুষ গ্রহণ করলেও বাকি অর্ধেকটায় বেজায় বিরক্ত হন। 
বর্তমান সময়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত মন্ত্রী এবং প্রতিমন্ত্রী দু’জনই নিয়মিত সংবাদের শিরোনাম হচ্ছেন তবে তা ভুল কারণে। এই মন্ত্রণালয় দেশের আইনশৃঙ্খলা রক্ষার দায়িত্বে নিয়োজিত। তারা নিত্যদিন দাবি করেন দেশের আইনশৃঙ্খলা আগের যে কোন সময়ের তুলনায় ভাল। বাংলাদেশের মতো ষোলো কোটি মানুষের উন্নয়নশীল দেশে আইনশৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণের মধ্যে রাখা মোটেও সহজ কাজ নয়। জানা মতে, এই মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বও সহজে কেউ যে নিতে চায় তাও নয়। সেই দায়িত্ব শেখ হাসিনার মন্ত্রিসভায় বর্তাল আওয়ামী লীগের এককালের মাঠের কর্মী সাহারা খাতুনের ওপর। তাঁর প্রতিমন্ত্রী হিসাবে দায়িত্ব পেলেন স্বাধীন বাংলাদেশের প্রথম প্রধানমন্ত্রী তাজউদ্দীন আহমদের ছেলে সোহেল তাজ। ব্যক্তিগত কারণে তিনি ইস্তফা দিলে তাঁর স্থলাভিষিক্ত হলেন শামসুল হক টুকু। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রণালয়। মানুষ আধপেট খেয়ে হলেও তার জীবন, পরিবার আর সহায় সম্বলের নিরাপত্তা চায়। তা যোগান দিতে না পারলে মন্ত্রণালয় এবং তার দায়িত্বে থাকা ব্যক্তিরা তীব্র সমালোচনার মুখে পড়েন। যেমনটি বর্তমানে ঘটছে সাহারা খাতুন এবং শামসুল হক টুকুর ক্ষেত্রে। একসময় শিক্ষিত লোক পুলিশের চাকরিতে যেতে চাইত না। বর্তমানে অফিসার ক্যাডারে যারা নিয়োগপ্রাপ্ত হন তাঁরা সকলে বিসিএস পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে যান। সিপাহি হিসাবে যাঁরা ভর্তি হয় তারা ন্যূনপক্ষে এসএসসি পাস। সুতরাং বর্তমানে পুলিশ বাহিনীতে যাঁরা আছেন তাঁদের কাছ হতে মানুষ ভাল আচরণ আশা করতেই পারে। আর পুলিশের সেøাগানও হচ্ছে ‘পুলিশ জনগণের বন্ধু।’ কিন্তু বাংলাদেশের বর্তমান পুলিশ সাধারণ মানুষসহ বিভিন্ন পেশার মানুষের সাথে যে দুর্বৃত্তসুলভ আচরণ করছে তাতে তো তারা তাদের এই সেøাগানের প্রতি কোন সুবিচার করছে না। সাধারণ মানুষ বলে বন্ধু হয়ে যদি পুলিশের আচরণ এই রকম হয় তাহলে শত্রু হলে তারা কী রকম আচরণ করত? তারা সাধারণ মানুষ, মহিলা, রাজনৈতিক কর্মী, শিক্ষক, সাংবাদিক কাউকে রেহাই দিচ্ছে না। সকলে তাদের দুর্বৃত্তপনা আচরণের শিকার হচ্ছে। অবশ্য এটিও সত্য যে, পুলিশের মধ্যে মানবিক গুণাবলিসম্পন্ন অনেক পেশাদার পুলিশ আছে। তবে তারা কেন জানি কোণঠাসা। পুলিশের এই হেন আচরণ যে শুধু বর্তমান সরকারের আমলেই হচ্ছে তা নয়। বিগত জোট সরকারের আমলে তাদের আচরণ আরো খারাপ ছিল। বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদের গুলি করে রাজপথে হত্যা করেছিল। একজনকে হত্যা করে নিজেদের পানির ট্যাঙ্কে লুকিয়ে রেখেছিল। দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে একাধিক সাংবাদিককে হত্যা করা হয়েছিল। প্রকাশ্য দিনের বেলায় জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে সাংবাদিকদের নির্বিচারে লাঠিপেটা করে হাসপাতালে পাঠিয়েছিল। বিবৃতি দিয়ে তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আবদুল মতিন বলেছিলেন, স্বল্প আলোতে পুলিশ সাধারণ মানুষ আর সাংবাদিকদের মধ্যে তফাত করতে পারেনি। এর আগে জানা ছিল না সাধারণ মানুষকে পেটানোর জন্য পুলিশকে লাইসেন্স দেয়া হয়েছে। এই সব অনাচার হতে মুক্তি পাওয়ার জন্যই বিগত সংসদ নির্বাচনে দেশের মানুষ আওয়ামী লীগ আর তার মিত্রদের হাত উজাড় করে ভোট দিয়ে নির্বাচিত করেছিল। তারা আশা করেছিল নতুন সরকারের অধীনে পুলিশ যথাযথ আচরণ করবে। সে আশা তাদের ভঙ্গ হয়েছে যদিও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলছেন, পুলিশ আগের চেয়ে ভাল হয়েছে। কিন্তু তিনি বা তার প্রতিমন্ত্রী যাই বলুক বর্তমানে জনগণ পুলিশকে আর জনগণের বন্ধু নয় বরং আইনী অস্ত্রহাতে সন্ত্রাসী হিসাবে দেখছে। পুলিশ আর র‌্যাব দুটোই স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অধীনে। উভয়ই পাল্লা দিয়ে এখনও ক্রস ফায়ারের নামে মানুষ হত্যা করছে। এই কারণে তারা দেশে এবং দেশের বাইরে তুমুল সমালোচিত হয় এবং এর কারণে সরকারের সুনাম ক্ষতিগ্রস্ত হয়। তাতে কারো কিছু যায় আসে না বলে মনে হয়। ইদানীং হঠাৎ করে পুলিশ সাংবাদিক পেটানোর মচ্ছব শুরু করেছে। এটি কেন হচ্ছে তা নিয়ে অনেকে অবাক হন এবং প্রশ্ন করেন। এতে অবাক হওয়ার কিছু নেই কারণ এই কাজটি সম্ভবত তারা আর কয়েকমাস পরে করত কারণ তখন হতেই তারা পরবর্তী সরকারের জন্য কাজ করার কথা। সাংবাদিক আর সরকারের মাঝে কৌশলে দূরত্ব সৃষ্টি করতে পারলে পরবর্তী সরকারে যাঁরা আসবেন তাঁদের লাভ। সেই বিশ্বাসেই তারা এই কাজটি করছে। তাদের কাজ করার সময়সূচীর সরকারের অগোচরে সম্ভবত পরিবর্তন করা হয়েছে যার কারণে সরকারের জন্য নাজুক অবস্থা সৃষ্টি হয়েছে। তবে মানুষকে হতাশ করেছে যখন তারা দেখেছে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী এবং তার প্রতিমন্ত্রী দুর্বৃত্ত পুলিশের পক্ষ নিয়ে কথা বলছেন। মঙ্গলবার ঢাকার আদালত প্রাঙ্গণে যা ঘটল তা শুধু ন্যক্কারজনকই নয় বরং নজিরবিহীন। এটি সভ্য সমাজের ধারণারও বাইরে। যারা ওই দিনের ঘটনার জন্য দায়ী তাদের উপযুক্ত বিচার হবে তেমনটি কেউ আশা করে না কারণ অতীতে হয়নি। জোট সরকারের আমলে চট্টগ্রামে যে পুলিশ অফিসারটি বর্ষীয়ান ফটোসাংবাদিক আলহাজ জহিরুল হকসহ অনেক সাংবাদিককে পিটিয়ে জখম করেছিল সেই পুলিশ অফিসারের পদোন্নতি হয়েছিল এবং তিনি জাতিসংঘ শান্তি রক্ষা মিশনে গিয়েছিলেন। পুলিশকে কেন্দ্র করে কোন একটি অনাকাক্সিক্ষত ঘটনা ঘটলে প্রথমে বলা হয় তাকে ক্লোজ করা হয়েছে। ক্লোজ করার অর্থ তাকে নিয়মিত ডিউটি থেকে বিরত রাখা। মানে ওএসডি। একটু বড় কিছু হলে বলা হয় তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় তদন্ত করা হচ্ছে এবং তদন্ত চলাকালে তাকে সাসপেন্ড করা হলো। তারপর অধিকাংশ ক্ষেত্রেই সব কিছুর ওখানেই সমাপ্তি। তবে বর্তমানে পুলিশের এই যে প্রচ- জনবিরোধী আচরণ তা মানুষ সহজভাবে নেয়নি। জনগণের ধারণা তাদের এই হঠাৎ আচরণগত পরিবর্তনের পিছনে নিশ্চয় কোন অন্য কোন কারণ আছে যা সরকার বুঝতে পারছে না। তবে এটাও ঠিক সরকারে যাঁরা থাকেন তাঁরা সময়মতো অনেক কিছুই বুঝতে পারেন না। আর সব চাইতে বালখিল্যসুলভ বক্তব্যটা দিয়েছেন স্বয়ং স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শামসুল হক টুকু। বর্তমান মন্ত্রিসভার একাধিক মন্ত্রী আছেন যারা কখনো ভেবে চিন্তে কথা বলেন বলে মনে হয় না। টুকু সাংবাদিকদের উদ্দেশে নসিহত করেছেন তারা যেন পুলিশের কাছ হতে নিরাপদ দূরত্বে থাকেন। সাধারণত কোন হিংস্র প্রাণী হতে মানুষকে নিরাপদ দূরত্বে থাকতে বলা হয়। প্রাচীনকালে কুষ্ঠ রোগীদের কাছ হতে মানুষকে দূরে থাকতে বলা হতো। স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রীর বাহিনী যদি এরই মধ্যে এই দুটির কোন একটিতে রূপান্তর হয়ে থাকে তাহলে তাদের জামায় তা লিখে দেয়া হোক। মানুষ তাদের কাছ হতে দূরে থাকবে। 
বিদ্যুৎ মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বে কে আছেন তা ঠিক মানুষ জানে না। তবে বিদ্যুৎ নিয়ে সব সময় এই মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টাকে কথা বলতে দেখা যায়। উপদেষ্টা হিসাবে জনগণের কাছে তার কোন জবাবদিহিতা নেই। এই যাবত তিনি বিদ্যুৎ বিষয়ে যত উপদেশ দিয়েছেন সবই কেবল উদ্ভটই নয়, অবাস্তবও বটে। একবার তিনি প্রধানমন্ত্রীকে বুদ্ধি দিয়েছিলেন ঘড়ির কাঁটা ঘুরিয়ে দিয়ে বিদ্যুৎ সমস্যার সমাধান করার জন্য। কিছুদিন তা চলার পর প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপে তা বন্ধ হয়। কুইক রেন্টাল পাওয়ার প্লান্ট নিয়ে অনেক তেলেসমাতি কারবার চলল। সেই কারবারে আদার ব্যাপারীরাও নেমে পড়ল। সাড়ে তিন বছরের মাথায় এসে বিদ্যুৎ সমস্যার সমাধানের বদলে তা আরও প্রকট হয়ে দেখা দিয়েছে। সরকার বলছে নতুন সাড়ে তিন হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ জাতীয় গ্রিডে যোগ হয়েছে। যেটি সরকার কখনও বলে না কত মেগাওয়াট জাতীয় গ্রিড হতে বিয়োগ হয়েছে। তাহলে মানুষ বুঝতে পারত যোগ বিয়োগের নিট ফলাফল কী। আমি ধানম-ির যে এলাকায় থাকি (রোড ৯/এ) সেখানে দিনের বেলায় তো কম পক্ষে কয়েক ঘণ্টা বিদ্যুৎ থাকে না। কিন্তু বড় প্রশ্ন হচ্ছে রাত বারোটার পরও কেন একাধিক বার লোডশেডিং হয়? এই সড়কের বাসিন্দাদের পানির জন্য এখন নিয়মিত ওয়াসার গাড়িবাহী ট্যাঙ্কির ওপর নির্ভর করতে হয়। ওয়াসা স্থানীয় সরকারের অধীনে। সেই মন্ত্রণালয়ের কাজকর্ম দেখলে মনে হওয়ার যথেষ্ট কারণ আছে এই মন্ত্রণালয় না থাকলে সরকারের কোন ক্ষতি-বৃদ্ধি নেই। বিদ্যুৎ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টার কাছ হতে সম্প্রতি আর একটা অদ্ভুত প্রস্তাব শোনা গেল। কেউ চড়া মূল্য দিলে তাকে নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুত দেয়া হবে। কোথা হতে এই বিদ্যুত আসবে সে সম্পর্কে তিনি কিছু বলেননি অথবা যদি দেয়া সম্ভব না হয় তাহলে কী হবে তাও না। আর এই তথাকথিত নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহের জন্য যে জটিল পদ্ধতির কথা তিনি বলেছেন তা মেনে নিয়ে কেউ সংযোগ নিলে বুঝতে হবে তিনিও তার মতো বুদ্ধিমান। এই উপদেষ্টা একবার বাংলাদেশে বিনিয়োগের জন্য কোটি টাকা খরচ করে বিলাতে রোডশো তামাশা করতে গিয়েছিলেন। নিট ফল শূন্য। 
আমি টিভিতে নিয়মিত ইউরোপীয় ফুটবল খেলা দেখি। প্রায়শ দেখা যায় একজন খেলোয়াড় কোন কারণে হয়ত ভাল খেলতে পারছে না। তখন তাকে কোচ মাঠ থেকে তুলে এনে অন্য খেলোয়াড়কে মাঠে নামান। মেসি, রোনালদো, কাকা বা দ্রগবার মতো ঝানু খেলোয়াড়দেরও অনেক সময় কোচ মাঠ থেকে তুলে আনেন। তাদের পরিবর্তে মাঠে অন্য খেলোয়াড়কে নামান। এই সময়ে এটি আর অস্বীকার করার উপায় নেই যে, শেখ হাসিনার টিমের সব খেলোয়াড় ঠিকমতো খেলতে পারছে না। সময় মতো তাদের মাঠ থেকে তুলে না আনলে সামনে বিপদ হতে পারে। সময়মতো তিনি তার টিমে পরিবর্তন আনবেন এটাই তার সমর্থকদের প্রত্যাশা। আর সর্বশেষ একটি কথা বলতেই হয়। একজন ‘বড়ভাই’ দেশের বাইরে আছেন বর্তমান সরকার ক্ষমতায় আসার আগে হতে। তিনি সেখানে বসে শুধু ডাল-ভাত খাচ্ছেন তা তো হতে পারে না। এই সরকার যতদিন ক্ষমতায় থাকবেন ততদিন তার বেজায় অসুবিধা। সুতরাং তিনি সেই দূরদেশে বসে কী কলকাঠি নাড়ছেন তা তো সরকারকেই খোঁজ রাখতে হবে। 
১ জুন ২০১২
লেখক : শিক্ষাবিদ ও বিশ্লেষক

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন